Wellcome to National Portal
কৃষি তথ্য সার্ভিস (এআইএস) গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
Text size A A A
Color C C C C

সর্ব-শেষ হাল-নাগাদ: ১৭ জানুয়ারি ২০১৬

রাজধানীতে জাতীয় সবজি মেলা ২০১৬ ও সবজি প্রদর্শনীর উদ্বোধন


প্রকাশন তারিখ : 2016-01-17


 

সাম্প্রতিক সময়ে আমাদের কৃষি ব্যবস্থায় ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে। আমরা খরপোষ কৃষি থেকে বাণিজ্যিক কৃষিতে পা রাখছি। আমাদের কৃষকগণ উচ্চ ফলনশীল এবং হাইব্রিড প্রযুক্তি ভালভাবেই গ্রহণ করেছে। এমনকি জিএমও প্রযুক্তির ক্ষেত্রেও আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ অডিটরিয়ামে ‘পুষ্টি নিরাপত্তা ও দারিদ্র্য দূরীকরণে বছরব্যাপি সবজি চাষ’ বিষয়ক সেমিনার এবং রাজধানীর খামারবাড়ির আ.কা.মু গিয়াস উদ্দিন মিলকী অডিটরিয়াম চত্বরে জাতীয় সবজি মেলা ২০১৬ ও সবজি প্রদর্শনীর উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পানি সম্পদ মন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ এসব কথা বলেন। সবজি উৎপাদনের অর্জন ও সফলতাকে ধরে রাখার আহ্বান তিনি আরও উল্লেখ করেন, সবজির জন্য অতি উপযোগী স্থানসমূহ চিহ্নিত করে ঐ সকল স্থানে পণ্য উৎপাদন ও বিপণনের সকল সুবিধাদি যেমন বাজার ব্যবস্থা, যোগাযোগ অবকাঠামো, কৃষিপণ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্পস্থাপনা গড়ে তুলতে হবে। কৃষকেরা প্রচুর পরিমাণে সবজি উৎপাদন করে থাকে কিন্ত  যথাযথ সংরক্ষণ, প্রক্রিয়াকরণ ও বাজারজাত তথা রপ্তানির সীমিত সুযোগের কারণে তেমনভাবে লাভবান হতে পারছে না। এক্ষেত্রে কৃষিপণ্য রপ্তানি সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে শক্তিশালীকরণের উদ্যোগ নিতে হবে। মন্ত্রী আরও বলেন, কৃষি ও কৃষক বান্ধব এ সরকার সবার জন্য খাদ্য নিশ্চিত করতে বদ্ধ পরিকর। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন। জননেত্রী শেখ হাসিনা কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি তথা কৃষকের ভাগ্য উন্নয়নে ইতোমধ্যে দৃশ্যমান অনেক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন এবং ভবিষ্যতেও এ ধারা অব্যাহত থাকবে। সবজি রপ্তানিতে বড় সম্ভাবনা আছে উল্লেখ করে পানিসম্পদ মন্ত্রী বলেন, রপ্তানি আয়ের ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা থাকবে সবজির। এ ক্ষেত্রে অর্গানিক পণ্য তৈরিসহ আরও যেসব ক্ষেত্র আছে সেগুলোর প্রতি নজর দিতে হবে। শুধু সবজি উৎপাদনই নয় এর যথাযথ সংগ্রহত্তোর ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে হবে। আমাদেরকে শিল্প কারখানার উপযোগী সাশ্রয়ী প্রযুক্তি উদ্ভাবন, পাতা জাতীয় সবজির সংরক্ষণ, প্রযুক্তি উদ্ভাবন,  সংগ্রহত্তোর বালাই ব্যবস্থাপনা, উৎপাদিত সবজির যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে প্রক্রিয়াজাতকরণসহ মূল্য সংযোজিত করার প্রয়োজনীয় উদ্যোগ, বাজার সুযোগ তৈরী, রপ্তানি সহায়ক সব ধরনের কমপ্লায়েন্সের ক্যাপাসিটি ডেভেলপমেন্ট, সবজি উৎপাদন ও সংগ্রহত্তোর পর্যায়ের সব ধরনের অপচয় রোধ করার জন্য উপযুক্ত প্রযুক্তি উদ্ভাবনের গবেষণা কার্যক্রম সমন্বয় ও জোরদার এবং সর্বোপরি, পচনশীল কৃষিপণ্যের জন্য প্রয়োজনে কারিগরি নীতিমালা তৈরী করতে হবে। কৃষি মন্ত্রনালয়ের তত্ত্বাবধানে গবেষণা-সম্প্রসারণ-কৃষক-বেসরকারী প্রতিষ্ঠান ও এনজিও সমন্বিতভাবে দেশের উন্নয়নে পরিকল্পিত কার্যক্রম প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করার আহবান জানান।


অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি মতিয়া চৌধুরী এমপি বলেন, বাংলাদেশে ১০০ টির অধিক বিভিন্ন ধরনের সবজির চাষ হয়ে থাকে। সুস্থ সবল জীবনের জন্য প্রতিদিন পরিমিত পরিমাণ বিভিন্ন ধরনের সবজি খাওয়া অপরিহার্য। কারণ জীবন ধারণের জন্য অত্যাবশ্যক ভিটামিন ও খনিজের অন্যতম উৎস হল সবজি। সারা বছর সবজি চাষের মাধ্যমে কৃষকের আয় বর্ধন কার্যক্রম ত্বরানি¦ত হলে গ্রামীণ কৃষি অর্থনীতিতে আসবে আমূল পরিবর্তন। বিদেশে সবজি রপ্তানির সুযোগকে কাজে লাগিয়ে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন আর একটি সম্ভাবনার দিক যা দেশের সার্বিক অর্থনীতির চাকাকে করবে আরও গতিশীল। মন্ত্রী বলেন, সবজি চাষে আমরাই প্রথম হাইব্রিড সবজি চাষের প্রচলন করেছিলাম। সবজি চাষের সফলতা শুধু আমরা বলি না, বিশ্ব বলে। সবজি চাষে বিশ্বে আমরা তৃতীয়, বিশ্ব তা স্বীকৃতি দিয়েছে। সমুদ্রসীমাকে কাজে লাগিয়ে সি হুইড, অর্গানিক পণ্য তৈরি, উন্নত বীজ, ভালো প্যাকেজিংয়ের বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেন কৃষিমন্ত্রী। অভ্যন্তরীন  বাজার চাহিদা এবং রপ্তানীর জন্য বাণিজ্যিক ভিত্তিতে সবজি উৎপাদনের যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে। কৃষি বিজ্ঞানীগণ সব্জির উন্নত জাত, উৎপাদন প্রযুক্তি ও সংরক্ষণ পদ্ধতি উদ্ভাবন করবেন এবং কৃষি সম্প্রসারণ কর্মী ও সংশ্লিষ্ট সরকারী, বেসরকারী মাঠ সম্প্রসারণ কর্মীরা তা চাষী ভাই ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে স্বল্পতম সময়ে ছড়িয়ে দেয়ার আহবান জানান।


কৃষি সচিব জনাব শ্যামল কান্তি ঘোষের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সেমিনারে স্বাগত বক্তব্য দেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কৃষিবিদ মো. হামিদুর রহমান। সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের নির্বাহী চেয়ারম্যান জনাব আবুল কালাম আযাদ। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর ড. মো. শহীদুর রশীদ ভূঁইয়া। অনুষ্ঠানে কৃষি মন্ত্রণালয়াধীন বিভিন্ন অধিদপ্তর/সংস্থার উর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ, বরেণ্য কৃষিবিদ, কৃষি বিশেষজ্ঞ, বিজ্ঞানী, গবেষক, কৃষকগণ অংশগ্রহণ করবেন।


কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কর্তৃক আয়োজিত এ মেলা চলবে ১৭-১৯ জানুয়ারি পর্যন্ত। এ মেলার অন্যতম উদ্দেশ্য হলো সবজি উৎপাদন ও খাওয়ার বিষয়ে জনসচেতনতা তৈরি। ‘হরেক রকম সবজি চাষে, সারা বছর অভাব নাশে’ প্রতিপাদ্য নিয়ে শুরু  হওয়া জাতীয় সবজি মেলা ও সবজি প্রদর্শনীতে প্রায় ১১২ রকমের সবজি প্রদর্শিত হচ্ছে।  দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে চাষ করা হরেক রকমের সবজি দেখার পাশাপাশি এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য জানতে পারবেন মেলায় আসা দর্শনার্থীরা। নতুন নতুন সবজির সঙ্গে শহরবাসীর পরিচয় ঘটবে প্রথমবারের মতো বৃহৎ পরিসরের এ মেলার মাধ্যমে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানসহ নানা আয়োজনের মধ্যে ছিলো র‌্যালি, সেমিনার, জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় বিশেষ ক্রোড়পত্র ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান । এতে বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি প্রায় ৫০ টি প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহন করে।